Newsroom
ব্যবসায় প্রশাসনে বিদেশে উচ্চশিক্ষার খোঁজখবর
Published: 17 Aug 2024ব্যবসায় প্রশাসনে বিদেশে উচ্চশিক্ষার খোঁজখবর
মাসুদ কবীর
দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা বর্তমানে তরুণদের জন্য খুব রোমাঞ্চকর একটি বিষয় হয়ে উঠেছে। অতীতের যেকোনো সময়ের থেকে এখন বেশি পরিমাণে শিক্ষার্থী যাচ্ছে বাইরের দেশগুলোতে পড়তে। সাধারণত STEM (SCIENCE, TECHNOLOGY, ENGINEERING, MATH/MEDICINE) প্রোগ্রামগুলোতে শিক্ষার্থী পড়তে যাওয়ার হার বেশি হলেও বর্তমানে ব্যবসায় প্রশাসন থেকে এ সংখ্যাটা কম নয়। বিশ্বব্যাপী ব্যবসায় প্রশাসনের প্রতিনিয়ত চাহিদা বৃদ্ধির কারণে বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যাও বাড়ছে। ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বৈচিত্র্য এবং চাকরিতে বর্ধিত ক্ষেত্র এ বিভাগের আবেদনকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
দেশের বাইরে ব্যবসায় প্রশাসনে ভর্তি বিষয়টিকে সাধারণত তিনভাগে ভাগ করা যায়। নর্থ আমেরিকা— যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা। ইউরোপ—জার্মানি, যুক্তরাজ্য, হাঙ্গেরি, নরওয়ে, ফিনল্যান্ডসহ অন্যান্য ইউরোপীয় দেশ। এশিয়া—চীন, জাপানসহ অন্যান্য দেশ।
এই লেখাতে মূলত আমরা প্রথম দুইটা পার্ট নিয়ে আলোচনা করব। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপের দেশগুলোতে বৃত্তির বিষয়ে।
প্রথমেই বলে নেই ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ থেকে ব্যাচেলর করে (ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা বিবিএ ডিগ্রি নামে, যা অত্যধিক পরিচিত) দেশের বাইরে পড়ার সুযোগ বর্তমান সময়ে অনেক বেড়ে গেছে। দেশে বিবিএ করে দেশের বাইরে আপনি মূলত চারটি ডিগ্রির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
১. মাস্টার্সর্ অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এমবিএ
২. মাস্টার্স অব আর্ট বা এমএ
৩. মাস্টার্স অব সায়েন্স বা এমএস
৪. ডক্টরেট ডিগ্রি বা পিএইচডি
ধরা যাক, আপনি মার্কেটিং—এ বিবিএ করেছেন দেশের কোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সেক্ষেত্রে আপনি উপরোক্ত যেকোনো বিষয়ের জন্য আবেদন করতে পারবেন। অনেকেই এসব না জানার কারণে ব্যবসায় প্রশাসন থেকে দেশের বাইরে পড়ার সুযোগ কম এই ধারণা নিয়ে থাকেন, যা সত্য নয় বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। এখন আসি আপনি কোন কোন সাবজেক্টে আবেদন করতে পারবেন:
এই কথার উত্তর দেওয়াটা একটু কঠিন। মোটের ওপর বললে আপনি মোটামুটি সব ধরনের সাবজেক্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে অভারওল এমবিএ ডিগ্রি দিয়ে থাকে। আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্পেশালাইজড এমবিএ ডিগ্রি দিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে আপনি আবেদনের সময় হয়তো স্পেসিফিক করে দিতে পারেন। অথবা পড়া শুরু করার পর নিজের সুবিধামতো বেছে নিতে পারেন। এরপরও আপনাদের সুবিধার্থে আমি বিভিন্ন মেজর ঘেঁটে যেসব সাবজেক্টে আবেদন করতে পারবেন তা তুলে ধরছি:
১.মার্কেটিং : মার্কেটিং, মার্কেটিং অ্যানালাইসিস/অ্যানালিটিকস, ডিজিটাল মার্কেটিং, স্যোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, পাবলিক রিলেশন্স, কমিউনিকেশনস, অ্যাডভারটাইজিং, মার্কেটিং ম্যানেজম্যান্ট, অগার্নাইজেশনাল বিহেভিয়ার, স্পোর্টস মার্কেটিং, গ্রাফিকস ডিজাইন ইত্যাদি।
২.ফাইন্যান্স : ফাইন্যান্স, ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইলিস/অ্যানালিটিকস, ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজম্যান্ট, রিয়েল এস্টেট ম্যানেজম্যান্ট, ফাইন্যান্সিয়াল বিহেভিয়ার, ডাটা অ্যানালাইসিস, বিজনেস ফাইন্যান্স, পারসনাল ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজম্যান্ট/প্রোগ্রাম ইত্যাদি।
৩.অ্যাকাউন্টিং : অ্যাকাউন্টিং, অ্যাকাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস, ম্যানেজেরিয়াল অ্যাকাউন্টিং, অ্যাকাউন্টিং অ্যানালাইসিস, অ্যাডভান্সড অ্যাকাউন্টিং, কস্ট অ্যাকাউন্টিং, ট্যাক্সেশন, এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকাউন্টিং, অডিটিং ইত্যাদি।
৪.ম্যানেজম্যান্ট : বিজনেস ম্যানেজম্যান্ট, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজম্যান্ট, মার্কেটিং ম্যানেজম্যান্ট, প্রজেক্ট ম্যানেজম্যান্ট, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজম্যান্ট, ইনফরমেশন টেকনোলজি ম্যানেজম্যান্ট, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজম্যান্ট, রিটেইল ম্যানেজম্যান্ট, অগার্নাইজেশন লিডারশিপ অ্যান্ড ম্যানেজম্যান্ট, এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ম্যানেজম্যান্ট, ডাটা ম্যানেজম্যান্ট ইত্যাদি।
উল্লেখ্য, আপনি আন্ডারগ্রাজুয়েটে যে সাবজেক্টেই পড়–ন না কেন, যথাযথভাবে যুক্তি খণ্ডন সাপেক্ষে আপনি যেকোনো সাবজেক্টে মুভ করতে পারবেন। ধরুন, আপনি মার্কেটিং—এ পড়াশোনা করেছেন, কিন্তু আপনার কম্পিউটার সায়েন্সের প্রতি খুব আগ্রহ এবং আপনি কাজও পারেন বেশ ভালো। সেক্ষেত্রে আপনি অনায়াসে কম্পিউটার সায়েন্সে মাস্টার্সের জন্য অনায়াসে আবেদন করতে পারেন। এ ধরনের দু—একটা কোর্স বা সার্টিফিকেশন করা থাকলে এতে আপনি আরো ভালোভাবে যৌক্তিকতা তুলে ধরতে পারবেন। সুতরাং আপনি মার্কেংটিং এর শিক্ষার্থী হয়ে যে ডাটা সায়েন্সে আবেদন করা যাবে না এটা কখনো ভাববেন না। উচ্চশিক্ষার দ্বার সবার জন্য খোলা।
এখন আসি নর্থ আমেরিকা (কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র)’তে পড়ার বিষয়ে:
অন্যান্য দেশে সেন্ট্রালি স্কলারশিপ থাকলেও নর্থ আমেরিকাতে সেন্ট্রালি এর চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আলাদা করে স্কলারশিপ থাকে এবং এই স্কলারশিপের পরিমাণ কয়েকশো মিলিয়ন ডলার হয়ে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে। এখানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকের সংখ্যা অনেক বেশি থাকে এবং মোটামুটি বিজনেস স্কুলগুলোতে আন্ডারগ্র্যাডে শিক্ষার্থী অনেক বেশি হয়ে থাকে। দেখা যায় যে, ক্লাসগুলো ঠিকঠাক পরিচালনার জন্য অনেক শিক্ষকেরই সহকারী প্রয়োজন হয় এবং যারা মাস্টার্স ও পিএইচডি লেভেলে পড়াশোনা করছেন, তারা এক্ষেত্রে শিক্ষক সহকারী (টিচিং এসিসট্যান্ট) হিসেবে কাজ করে থাকেন। টিচিং এসিসট্যান্টের কাজ মূলত গ্রেডিং, হলে গার্ড দেওয়া, শিক্ষার্থীদের ইমেইলের রিপ্লে দেওয়া। টিচিং এসিসট্যান্ট একধরনের গ্র্যাজুয়েট এসিসট্যান্টশিপ। এ ছাড়াও আরও দুই ধরনের এসিসট্যান্টশিপ রয়েছে। রিসার্চ এসিসট্যান্ট ও গ্রাজুয়েট এসিসট্যান্ট। রিসার্চ এসিসট্যান্টরা সাধারণ কোনো প্রফেসরের রিসার্চের কাজে সহযোগিতা করেন। অন্যদিকে গ্র্যাজুয়েট এসিসট্যান্ট ডিপার্টমেন্টের অফিসিয়াল কাজে সহযোগিতা করে থাকেন। এসিসট্যান্টশিপ পেলে অন্য কোনো কাজের সুযোগ থাকে না। এসিসট্যান্টশিপ পেলে সাধারণত সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা সময় দেওয়া লাগে। এসিসট্যান্টশিপের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো— এতে করে আপনার বিশাল পরিমাণ টিউশন ফি মওকুফ হয়ে যায় এবং মাসিক একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ স্টাইপেন্ড পাওয়া যায়। এই স্টাইপেন্ডে আপনার চলার খরচ বহন করা যায়। এজন্য ইদানীং কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের দিকে শিক্ষার্থীরা প্রচুর পরিমাণে আবেদন করছেন। এসিসট্যান্টশিপের জন্য সরকার বা কারো কাছে ধরনা দেওয়া লাগে না। এটা বিভাগের একান্ত বিষয়। আপনার বিভাগের যিনি হেড (গ্রাজুয়েট কর্ডিনেটর বলা হয়ে থাকে) তাঁকে ইমেইল করে যোগাযোগ করলে দেখা যায় এসিসট্যান্টশিপ পাওয়া যায়।
এসিসট্যান্টশিপ দুইভাবে ম্যানেজ করা যায়।
১.প্রফেসর ইমেইল করে
২.সেন্ট্রালি ইমেইল করে
কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের বিজনেস প্রোগ্রামগুলোতে বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ডিং মূলত সেন্ট্রালি হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে প্রফেসরকে আলাদাভাবে ইমেইলের কোনো প্রয়োজন হয় না। সাধারণত বিভাগের যিনি প্রোগ্রাম কর্ডিনেটর/ গ্রাজুয়েট কর্ডিনেটর, উনাকে ইমেইল করে যোগাযোগ করলে এসিসট্যান্টশিপ মেলে। সেক্ষেত্রে প্রথম ইমেইলে আপনার পরিচয়, ব্যাকগ্রাউন্ড ও সেইসাথে সিভি এড করে দিয়ে এপ্রোচ করলে ভালো সাড়া পাওয়া যায়।
ইউনিভার্সিটি খোঁজা
কানাডাতে বিশ্ববিদ্যালয় সংখ্যা হাতেগোনা হলেও শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন যুক্তরাষ্ট্রের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করব তা ভাবা নিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৫০০—এর মতো। দেখা যায় যে, কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় বাদ দিলে বাকি সবাই একে অপরের সাথে পাল্লা দিয়ে চলে কে কার থেকে কত ভালো করতে পারে। বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশগুলো থেকে যারা পড়তে আসেন তাদের বেশির ভাগেরই বড় একটা সময় যায়, কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করব তা নিয়ে। সেক্ষেত্রে আমার ছোটোখাটো সাজেশন হলো:
১.আপনার আশেপাশের কেউ যদি যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে থাকেন, তাঁকে জিজ্ঞেস করুন যে, তিনি কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছেন। তার লিস্টগুলো আপনি টুকে নিন। এভাবে কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করলে দেখা যাবে, আপনার হাতে ১৫/২০—এর মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম চলে আসছে। এইসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইট দেখে নিন। এভাবে করলে আপনার সময় অনেক বেঁচে যাবে।
২. US news এবং Times higher Education —এর র্যাংকিং ফলো করতে পারেন।
৩.বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনি বিস্তারিত তথ্য পাবেন। নরমালি সার্চ দিলেই সব তথ্য চলে আসে। যেমন ধরুন, আপনি লিখলেন “the University of Miami Business School Admission Requirements” এতে দেখবেন আপনার তথ্য পেয়ে গেছেন।
আবেদন
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক বাছাইয়ের পর আপনার কাজ হবে গ্রাজুয়েট কর্ডিনেটরকে ইমেইল করা। এরপর তার ফিডব্যাকের ওপর ভিত্তি করে আপনি তার কাছে ফান্ডিং ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে জিজ্ঞেস করতে পারেন। পজিটিভ ফিডব্যাক পেলে আপনার উচিত হবে ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদন করতে যা যা লাগে মূলত—
- সিভি।
- টেস্ট স্কোর: জিম্যাট/জিআরই (কোভিডের কারণে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগে না। তবে জিআরই/জিম্যাট থাকলে ফান্ডিং পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। অন্যদিকে বিজনেস স্কুল গুলা সাধারণত জিআরই/জিম্যাট বাধ্যতামূলক করে রাখে)।
- স্টেটমেন্ট অব পারপাস (কেন আপনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সাবজেক্টে পড়তে চান তা লেখা লাগে)।
- সকল অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট ও মার্কশিট।
- ল্যাঙ্গুয়েজ স্কোর: আইইএলটিস বা টোফেল।
- রিকমেন্ডেশন লেটার (২/৩টা)।
- ক্ষেত্রবিশেষে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এসিসট্যান্টশিপের জন্য আলাদা আবেদন করা লাগে। আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগে না। এটা ওয়েবসাইটে লেখাই থাকে।
একটা কথা উল্লেখ্য যে, শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদন করতে GRE/GMAT লাগে। ইউরোপ বা এশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদনের ক্ষেত্রে তা লাগে না।
ইউরোপের দেশগুলোতে মাস্টার্স : ইউরোপের দেশগুলোতে শিক্ষার্থী যাওয়ার হার তুলনামূলক সবচেয়ে বেশি। এরমধ্যে ইংরেজি ভাষাভাষীর দেশ ইংল্যান্ডে পড়তে যাওয়া তুলনামূলক অন্যান্য দেশ থেকে সহজ। ইংল্যান্ডে বিশ্ববিদ্যালয় বেশি হওয়ার কারণে সাবজেক্টের ভিন্নতাও বেশি। প্রচুর পরিমাণে শিক্ষার্থীও যাচ্ছেন ইংল্যান্ডে। তবে ইংল্যান্ডে ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপের পরিমাণ খুবই কম। ব্রিটিশ সরকারের কিছু সরকারি বৃত্তি হলো— Commonwealth Scholarship and Fellowship Plan (CSFP), British Chevening Scholarships for International Students, and University Research Scholarships (URS). এর বাইরে মেধাভেদে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আলাদা স্কলারশিপ রয়েছে।
জামার্নিতে সাধারণত কোনো টিউশন ফি নেই। তবে জার্মানিতে টিকতে হলে আপনাকে জামার্ন ভাষা শেখার মানসিকতা থাকতে হবে। জার্মান সরকারের স্কলারশিপের নাম DAAD Scholarship (German Academic Exchange Service)। তবে এই স্কলারশিপ পেতে আপনাকে দুইবছরের মতো কাজের/চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এর বাইরে হাঙ্গেরি সরকারের স্কলারশিপের নাম Stipendium Hungaricum. তুর্কিয়ে সরকারের স্কলারশিপের নাম Türkiye Scholarships. অন্যদিকে নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, সুইডেনেও পড়তে যাওয়ার হার প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে।
The Erasmus Mundus Scholarship Programme হলো ইউরোপের সবচেয়ে প্রেস্টিজিয়াস স্কলারশিপ। এই স্কলারশিপের আওতায় প্রতিবছর শতাধিক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী পড়তে যায়। ইরাসমাস মুন্ডুস—এর আওতায় একজন শিক্ষার্থী ইউরোপের তিনটি দেশের তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন সেমিস্টার পড়ার সুযোগ পায়। শিক্ষার্থীর বিমানভাড়াসহ সব ধরনের খরচ বহন করে থাকে ইরাসমাস কতৃর্পক্ষ।
এশিয়া মহাদেশে উল্লেখজনক হারে স্কলারশিপ দিয়ে থাকে:
জাপান: Japanese Government Scholarship (Monbukagakusho: Mext), both for Undergraduate and Post Graduate Studies (MS and Ph.D). For Post Doctoral Scholarship: Japan Society for the Promotion of Science (JSPS) Fellowship.
চীন: China Scholarship Council (CSC) Scholarships.
দক্ষিণ কোরিয়া: Korean Government Scholarship Programme (KGSP) for Undergraduate and Post Graduate Studies.
মালয়েশিয়া: Malaysia International/Governmental Scholarship (MIS) for MS, Ph.D. and Post Doctorate.
ভারত: ICCR
কাতার: Hammad Bin Khalifa University Scholarship সহ অন্যান্য দেশ।
অস্ট্রেলিয়া সরকারও প্রচুর পরিমাণে স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। এসব তথ্য জানার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো— গুগলে সার্চ দিয়ে এসব স্কলারশিপের জন্য প্রয়োজনীয় রিকয়ারমেন্ট জেনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করা ও পরে আবেদন করা।
কোন বর্ষ থেকে প্রস্তুতি শুরু করা উচিত?
দেশের বাইরে পড়তে আসার ইচ্ছা থাকলে আমার ব্যক্তিগত পরামর্শ থাকবে নিজেকে গবেষণার দিকে মনোনিবেশ করা। গবেষণা মানে যে শুধু ল্যাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পড়ে থেকে এপ্রোন পরে গবেষণা করতে হয় তা কিন্তু নয়। গবেষণার বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। তার মধ্যে এটি একটি। তবে বিজনেস ব্যাকগ্রাউন্ডের গবেষণার ধরন ততটা ল্যাবকেন্দ্রিক নয়। হিউম্যান সাইকোলজি খুব বড় একটা পার্ট বিজনেস ব্যাকগ্রাউন্ডের গবেষণার জন্য। যেমন ধরুন, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে অনলাইন কেনাকাটার হার কেমন, এটাও গবেষণার ভালো একটা টপিক। নিজেকে প্রথম থেকেই গবেষণামনা করলে পরে এর সুফল পাওয়া যায়। এর মানে যে কাড়ি কাড়ি গবেষণা পেপার বের করতে হবে তা নয়। মানে নিজেকে আগ্রহী করে তোলা।
এর বাইরে তৃতীয় বর্ষ থেকে নিজেকে আস্তে আস্তে প্রস্তুত করা যেতে পারে। প্রথম প্রস্তুতি হিসেবে পাসপোর্ট করা, নিয়মিত বিভিন্ন কনফারেন্স বা প্রতিযোগিতাতে অংশ নেওয়া, IELTS, GRE/GMAT এ র প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করা, ইউনিভার্সিটি লিস্টিং করা ইত্যাদি। একটা এক্সেল শিটে কোন দেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের শেষ ডেট কবে তাও লিপিবদ্ধ করে রাখলে প্ল্যান মোতাবেক কাজ করলে সুবিধা।
লেখক:
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসটেক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত
Thanks.